সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৪১ পূর্বাহ্ন
বরিশাল সদর উপজেলার ৫নং চরমোনাই ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির কার্ডধারীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। কার্ড প্রদানের নামে প্রত্যেক কার্ডধারীর কাছ থেকে ১০০ টাকা করে আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সুবিধাভোগীরা।বরিশাল সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১টি ইউনিয়ন প্রায় সারে ৪ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় চাল বিতরণ করা হচ্ছে। অথচ দরিদ্র মানুষের সহায়তার জন্য চালু হওয়া এই কর্মসূচিই এখন অবৈধ অর্থ আদায়ের ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এ হিসাব মতে এ ওয়ার্ডথেকে প্রায় ৭৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ডিলারদের বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের মগরোপ প্রতাব ও রাজধর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ডিলাররা কার্ডধারীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নিয়ে তাদের অনলাইন কার্ড জমা রেখে নতুন একটি কার্ড দিচ্ছে। যদিও ঘটনাস্থলে কোনো কার্ডধারী প্রকাশ্যে কথা বলতে রাজি হননি, ফেরার পথে কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রকৃতপক্ষে তাদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। তাদের অভিযোগ, আমাদের বলা হয়েছে অফিস থেকেই টাকা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। টাকা না দিলে কার্ড দিতে গড়িমসি করা হয়। স্থানীয়ভাবে ডিলাররা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রকাশ্যে কেউ কথা বলতে চাননি বলেও জানান তারা। দরিদ্র মানুষের মাঝে সুলভ মূল্যে চাল পৌঁছে দেওয়ার এ কর্মসূচিকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে হলে প্রভাবশালী ও দূর্নীতিবাজ ডিলারদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের।
চরমোনাই ডিলার টেনু খন্দকার বলেন, আজ প্রায় ৭৮০ জনকে চাল দেওয়া হয়েছে। কার্ড বাবদ ১০০ টাকা করে চাওয়া হলেও মাত্র ৫০-৬০ জন টাকাও অনেকে দিয়েছেন। কেউ না দিলেও কার্ড দেওয়া হয়েছে।অন্যদিকে এলাকার ৪নং ওয়ার্ড ডিলার সুখেন্দ্র দাবি করেন, অনেক কার্ডধারী পরিবারের সদস্যরা অনলাইনের ফটোকপি ব্যবহার করে একাধিকবার চাল নিচ্ছেন। এজন্যই নতুন কার্ড করে তাদের দেওয়া হয়েছে, যার খরচ বাবদ ১০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। তার ভাষায়, আজ ৭৩৩ জন কার্ডধারী চাউল নিয়েছেন। অফিসিয়ালি টাকা নেওয়ার বিষয়ে কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি জানান তিনি এ প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান।কিছু মৃতু ব্যাক্তির চাল ডিলার সুখেদ্র আত্মসাৎ করার কথাও জানা গেছে ।সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বলেন, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির কার্ডে অতিরিক্ততো দুরের কথা একটি টাকাও নিতে দেওয়া যাবেনা এবং টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।যার কার্ড নাই অফিসে এসে কার্ড নিয়া যাবে একেবারে ফ্রি।
তিনি বলেন, এখনো আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, কার্ডের জন্য অতিরিক্ত টাকা আদায় সম্পূর্ণ অবৈধ- এবং টাকা নেওয়া যাবেনা। বিষয়টি আমি প্রথমবার আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।