বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৪১ অপরাহ্ন
অনুসন্ধান ২৪ >> গাজার ওপর আরোপিত অবরোধ ভাঙতে যাওয়া বিশাল ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-এর সবশেষ জাহাজটিও আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফ্লোটিলা সংগঠকরা জানায়, আটক হওয়া কয়েকজন কর্মী আটক হওয়ার মুহূর্ত থেকেই অনির্দিষ্টকালের অনশন ধর্মঘট শুরু করেছেন।
অস্ট্রেলীয় ক্যাপ্টেন ক্যামেরন গত বৃহস্পতিবার রাতে ভিডিও কলে ফ্লোটিলা আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মারিনেট বহর থেকে পিছিয়ে পড়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে কয়েকজন তুর্কি রয়েছেন, ওমানের একজন নারীও আছেন। আমরা গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার ভোরে সর্বশেষ আটক হওয়া জাহাজটির নাম ‘দ্য ম্যারিনেট’। পোল্যান্ডের পতাকা বহনকারী এই নৌযানটিতে ছয়জন ক্রু ছিলেন। সরাসরি সম্প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, ইসরায়েলি নৌসেনারা জোর করে জাহাজটিতে প্রবেশ করে নিয়ন্ত্রণ নেয়।
লাইভ ভিডিওতে ভোর ৪টার দিকে জাহাজটিকে আন্তর্জাতিক জলসীমায় গাজার দিকে অগ্রসর হতে দেখা যায়। জিও-ট্র্যাকার অনুযায়ী, তখন সেটি গাজার জলসীমা থেকে প্রায় ৪৩ নটিক্যাল মাইল দূরে ছিল।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগেই সতর্ক করেছিল যে, গাজার দিকে যাওয়া যেকোনো নৌযানকে তারা আটক করবে। ইতিমধ্যে বুধবার থেকে শুরু করে ৪০টিরও বেশি নৌযান আটক করা হয়েছে এবং প্রায় ৫০০ জন কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আটক হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন সুপরিচিত জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, বার্সেলোনার সাবেক মেয়র আদা কলাউ এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য রিমা হাসান। তাদের সবাইকে ইসরায়েলে নেওয়া হচ্ছে এবং সেখান থেকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানানো হয়েছে।
এত বড় আকারের নৌবহর এর আগে কখনো গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেনি। ফলে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করেছে এই উদ্যোগ। তবে ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে তীব্র নিন্দা কুড়িয়েছে।
ইতিমধ্যে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো ঘোষণা করেছেন, ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে তার দেশ থেকে ইসরায়েলি কূটনীতিকদের বহিষ্কার করা হবে এবং দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিও বাতিল করা হচ্ছে।
এছাড়া ইউরোপ অঞ্চল থেকে জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, স্পেন, গ্রিস ও আয়ারল্যান্ড আটক হওয়া কর্মীদের অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের মহাসচিব স্টিফেন কটন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক জলসীমায় এমন মানবিক কাজে নিয়োজিত জাহাজ আটক করা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। সমুদ্রকে যুদ্ধক্ষেত্র বানানো চলবে না।
জাতিসংঘ এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ফ্রান্সেসকা আলবানিজে বলেছেন, ইসরায়েলের এই আটক অভিযান মূলত ‘অবৈধ অপহরণ’।