আনোয়ার হোসেন .. বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার খোদাবক্সকাঠী মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ মঈনুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রদান না করার অভিযোগে বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর।
রবিবার মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শক মুহম্মদ হোসাইন স্বাক্ষরিত চিঠিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১১টায় মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মঈনুল ইসলাম এর অপসারণের দাবিতে বরিশাল আমতলার মোড়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সীমাহীন দুর্নীতি অনিয়ম অযোগ্যতার পাশাপাশি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠানকে ধংসের ষড়যন্ত্রের লিপ্ত থাকার অভিযোগে মাদ্রাসার প্রাক্তন শিক্ষার্থী সহ অভিভাবকেরা সম্মিলিত ভাবে ওই কর্মসূচী পালন করেন।

বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের স্থানীয় নেতৃবৃন্দদের সাথে আঁতাত করে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হয়েছেন। তিনি মনগড়া সিদ্ধান্তে মাদ্রাসাটিকে গড়ে তুলেছেন দুর্নীতি আর সন্ত্রাসীদের আখড়া হিসেবে। তার এমন অনিয়ম আর অযোগ্যতায় মাদ্রাসাটি ঐতিহ্য হারিয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, ভূয়া কাগজপত্র দিয়ে অধ্যক্ষ পদ দেখিয়ে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এমপিও সিটে অধ্যক্ষ পদের নাম লাগিয়ে নেয়। অথচ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিধিমালার নিয়ম অনুযায়ী আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেতে হলে আরবি প্রভাষক পদের যোগ্যতা কিংবা দাখিল মাদ্রাসার সুপার থাকার নিয়ম থাকলেও মোঃ মঈনুল ইসলামের ক্ষেত্রে তা নেই।

অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, নিয়োগের পর থেকেই বেতন বন্ধ করতে পায়তারা করে আসছে অধ্যক্ষ মঈনুল ইসলাম। বেতন না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ আমার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন, কিসের জন্য এই টাকা দিতে হবে জানতে চাইলে আমাকে বলেন টাকা না দিলে জীবনেও বেতন পাবে না, আমি মনে করেছিলা সে আমাকে কোন পরিক্ষা করিতেছে, কিন্তু দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ একসাথে নিয়োগ পাওয়া ৪ জনের বেতন বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, আজ ৮ মাস ধরে আমাদের বেতন বন্ধ। পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটাই কিন্তু পাষন্ড অধ্যক্ষ আমাদের সাব জানিয়ে দেয় সবাই মিলে ২০(বিশ) লাখ টাকা না দেওয়া পর্যন্ত তোদের বিল হবে না।

অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর লামিয়া বলেন, অধ্যক্ষ আমার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে আসছেন, তাকে টাকা দিতে না পারায় ৮ মাস ধরে আমার বেতন বন্ধ হয়ে আছে। আমার বেতনের টাকা দিয়ে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া ও সংসার চলে। বেতনের জন্য আমরা হাই কোর্টে রিট পিটিশন করেছি সেখানেও আমাদের বেতন দিতে বলেছে, কিন্তু অধ্যক্ষ আমাদের বেতনের স্বাক্ষর করবে না তার চাহিদার ঘুষ না পাওয়া পর্যন্ত। এখন আমরা নিরুপায় হয়ে বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি ও মানববন্ধন করতে বাধ্য হয়েছি।

নিরাপত্তা কমী মোঃ আরমান বলেন, আমরা যোগ্যতাভিক্তিতে চাকরি পেয়েছি, চাকরির পর থেকেই অধ্যক্ষ আমাদের সবাইর কাছে ২০ (বিশ) লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছে। আমরা এতো টাকা কোথায় পাব। আমাদের সংসার চালাতে কষ্ট হয় সেখানে জন প্রতি ৫ লাখ টাকা কিভাবে দিবো।

আয়া নুপুর আক্তার বলেন, আমার পরিবার খুব অসহায় চাকুরিটা পেয়ে মনে করে ছিলাম পরিবার পরিজন নিয়ে ভালো মতো দিন কাটবে,কিন্তু চাঁদার টাকা দিতে না পারায় অমাদের বেতন বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, যেখানে চাকুরি করবো সেখানে এখন বেতনের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে দপ্তরে ঘোড়াঘুরি করি। আজ ৮ মাস ধরে আমাদের বেতন বন্ধ। আমরা ঘুষখোর অধ্যক্ষর বিচার চাই।

এসব বিষয়ে অধ্যক্ষ মঈনুল ইসলাম বলেন, আমি তো তাদের বেতন বন্ধ করিনি।

আরও পড়ুন