সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন
অনুসন্ধান২৪>> মায়ের ফ্যাশন বোধ মেয়েকে খুব আকৃষ্ট করে। মা–ও মুগ্ধ মেয়ের বুদ্ধির দীপ্তিতে। অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন ও তাঁর মেয়ে মিশেল আমানিকে নিয়েই মা দিবসের বিশেষ এই প্রতিবেদন।
সায়েরার তখন কত বয়স হবে, এক কি দেড় মাস। নতুন মা বাঁধন। ঘরে আরামদায়ক ঢিলেঢালা পোশাক পরতেন। আর সেই একই রকম কাপড়ের টুকরা দিয়ে মেয়ের জন্য বানাতেন নিমা। ‘ও যখন একটু একটু করে বড় হতে লাগল, আমার এই শখ যেন আরও বিস্তৃত হলো। বাজার ঘুরে ঘুরে সুন্দর সুন্দর গজ কাপড় কিনতাম। সেই কাপড় দরজির দোকানে নিয়ে মা-মেয়ে একই রকম পোশাক বানাতাম।’ পছন্দমতো কাপড় খোঁজাটা যেমন কঠিন ছিল, তেমনি দরজির কাছে একই ছাঁটের পোশাক বানানোর কাজটাও কম ঝক্কির ছিল না। ‘তবে এখন মজা কী জানেন, সায়েরা আর আমার উচ্চতা প্রায় এক। যে কারণে আলাদা করে আর ওর জন্য জামা বানানো লাগে না। দোকানে গিয়ে সাইজ মিলিয়ে নিলেই হয়,’ এমনটাই বললেন বাঁধন।
‘বিয়ের পর কন্যাসন্তানের মা হওয়ার একটা সুপ্ত ইচ্ছা ছিল। মনে হতো, নিজের যখন একটা মেয়ে হবে, সব ইচ্ছা ওর সঙ্গে পূরণ করব। রং মিলিয়ে পোশাক পরব, ঘুরে বেড়াব আর দুজন মিলে ভাগাভাগি করে নেব সব মনের কথা। সৃষ্টিকর্তা যেদিন এই ইচ্ছা পূরণ করলেন, সেদিনের আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার নয়।’ মেয়ে মিশেল আমানি সায়েরার জন্মের দিনের অনুভূতি এখনো যেন অমলিন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের কাছে।
এ সময়ের আলোচিত ও ব্যস্ত অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। একজন সিঙ্গেল মা তিনি। একা হাতে বড় করেছেন সন্তানকে। একমাত্র মেয়ে সায়েরা পড়ছে উত্তরার সানবিমস স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে। ‘নকশা’র মা দিবসের বিশেষ আয়োজনে সময় দিলেন এই মা-মেয়ে জুটি।
ছবি তোলার ফাঁকে ফাঁকেই সায়েরা জানায়, মায়ের ফ্যাশন বোধ তাকে খুব আকৃষ্ট করে। আর মাকে মুগ্ধ করে মেয়ের বুদ্ধির দীপ্তি। আড্ডা দিতে, ঘুরে বেড়াতে আর বাইরে খেতে ভালোবাসেন এই জুটি। মায়ের সঙ্গে লং ড্রাইভে যাওয়া নাকি সায়েরার জীবনের অন্যতম সেরা ভালো লাগার স্মৃতি।
মা-মেয়ে জুটিকে রং ও মোটিফ মিলিয়ে পোশাক পরতে দেখা যায়। তবে এবারের ‘নকশা’র আয়োজনটা ছিল একটু ভিন্ন। একই রকম পোশাক নয়, একই ধাঁচের পোশাকে হাজির হলেন তাঁরা। মা-মেয়ে দুজনই বিষয়টিকে উপভোগ করেছেন। কথায় কথায় জানা গেল, বাঁধনের পছন্দের পোশাক শাড়ি, তবে পাশ্চাত্য ধাঁচের পোশাকও পরেন তিনি। সায়েরার পছন্দ পাশ্চাত্য ধাঁচের পোশাক। মায়ের পছন্দ উজ্জ্বল লাল, মেয়ের পছন্দ হালকা রং।
প্রায়ই বাইরে ঘুরে বেড়ান মা-মেয়ে। কখনো মুদিদোকানে সপ্তাহান্তের বাজার করেন, আবার কখনো বনানীর রেড বিউটি স্যালনে গিয়ে করান পেডিকিউর ও ম্যানিকিউর। বাইরে খেতে যাওয়া তাঁদের অন্যতম প্রিয় কাজ।
মাকে নানা সময় অবাক করে দিতে ভালোবাসে সায়েরা। ‘গত বছর মা দিবসে নিজে রান্না করে আমায় চমকে দিয়েছিল ও,’ বলছিলেন বাঁধন। তাঁর কাছেই জানা গেল, পাশ্চাত্যের নানা রকম মিষ্টিজাতীয় খাবার বানানোয় সায়েরা বেশ পটু। মায়ের কথা শুনে সায়েরাও সঙ্গে সঙ্গে যোগ করল, ‘মা–ও কিন্তু মজার মজার মিষ্টি বানান।’
এই যে একা হাতে মেয়েকে সুন্দর করে মানুষ করছেন বাঁধন, এটা অর্জন করাও কিন্তু এত সহজ ছিল না। এ জন্য তাঁকে লড়াই করতে হয়েছে। ‘মেয়েকে নিয়ে জীবনে অনেক কঠিন সময় পার করেছি। এই সময়গুলোই হয়তো সায়েরাকে এত বুদ্ধিদীপ্ত করতে সাহায্য করেছে,’ বলছিলেন বাঁধন।
বিচ্ছেদের পর মেয়ের অভিভাবকত্ব পেতে তাঁকে বেশ লড়াই করতে হয়েছিল। অবশেষে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে মেয়ের অভিভাবকত্ব পান তিনি।