রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন
অনুসন্ধান ২৪ >> গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় প্রতিদিন গড়ে ৩৭ জন মায়ের মৃত্যু হচ্ছে, প্যালেস্টাইনিয়ান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) জানিয়েছে। অন্যদিকে গাজা মিডিয়া অফিসের হিসাব বলছে, গত ১৭ বছরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হাতে প্রাণ হারিয়েছে ৯ হাজার ২২০ জন ফিলিস্তিনি নারী। খবর আনাদোলু এজেন্সি।
বৃহস্পতিবার মা দিবসের দিনে যৌথ বিবৃতি দেয় ফিলিস্তিনের ‘কমিশন অব ডিটেইনিস অ্যাফেয়ার্স’ ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘প্যালেস্টাইনিয়ান প্রিজনার সোসাইটি’। এতে বলা হয়, ইসরায়েলের কারাগারে বর্তমানে ৬৭ জন ফিলিস্তিনি নারী বন্দি রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৮ জন মা।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় গত বৃহস্পতিবার উদযাপন করা হয় আন্তর্জাতিক মা দিবস। এদিন সকালে ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ (টুইটারের পরিবর্তিত নাম) একটি পোস্ট দেয় পিআরসিএস। এতে জানানো হয়, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় প্রতিদিন গড়ে ৩৭ জন মায়ের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ গত সাড়ে পাঁচ মাসে সেখানে প্রায় ৬ হাজার ১০৫ জন মা প্রাণ হারিয়েছেন।
ইসরায়েলের হামলার মুখে অনেকের মতো আশ্রয় শিবিরে উঠেছেন উম আদেল জহর। ক্যান্সারসহ নানা রোগে আক্রান্ত তিনি। গত বৃহস্পতিবার বিকালে ইফতারের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ৭৭ বছর বয়সী এ নারী। মা দিবসের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর আমার সন্তানরা এ দিনটিতে আমাকে নতুন পোশাক ও ফুল উপহার দিত। কিন্তু আজ সে ধরনের কোনো আয়োজন নেই। আমরা এখন নিজেদের বাড়ি ফিরতে চাই; যুদ্ধের অবসান চাই।’
গত ১৯ জানুয়ারি জাতিসংঘের নারীবিষয়ক সংস্থা ইউএনওমেন এক বিবৃতিতে জানায়, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় প্রতি ঘণ্টায় দুজন মা প্রাণ হারাচ্ছেন। ইউএনওমেন সতর্ক করে দিয়ে বলে, গাজায় যা ঘটছে, তার ভয়াবহ মানসিক আঘাত (ট্রমা) ফিলিস্তিনের কয়েক প্রজন্মকে বইতে হবে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এতে প্রায় ১২০০ ইসরায়েলির মৃত্যু হয়। জবাবে ওইদিনই গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। এতে এ পর্যন্ত অন্তত ৩২ হাজার ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৭৪ হাজারের বেশি। এদিকে গত ১৭ মার্চ জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফ জানায়, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ১৩ হাজারের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলার মুখে গাজা উপত্যকার ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কিংবা ধ্বংস হয়েছে গাজার ৬০ শতাংশ অবকাঠামো।