শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৪০ অপরাহ্ন
সূত্র মতে, শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের পশ্চিম দুর্গাবাটির দুটি পয়েন্টে ২০০ মিটার, দাতিনা খালীর একটি পয়েন্টে ২০০ মিটার, গাবুরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর সোরা ও দৃষ্টিনন্দনে ৩০০ মিটার, মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের সেন্ট্রাল কালিনগর, হরিনগর বাজার ও কদমতলায় ৩৫০ মিটার, কৈখালী ইউনিয়নের বৈশখালিতে ১৫০ মিটার বেড়িবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া রমজাননগরের দ্বীপ গ্রাম গোলাখালির সবটাই ঝুঁকিপূর্ণ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলের অন্তত নয়টি পয়েন্টে উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সামান্য জলোচ্ছ্বাসের কারণে এসব পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হতে পারে পুরো জনপদ।
গাবুরার বাসিন্দা মনিরুজ্জামান বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলেই আমরা বাঁধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকি। বাঁধ ভাঙার কারণে আমাদের বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়।
রমজাননগরের আব্দুল কাদের বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সময় গোলাখালির মানুষ খুবই অসহায় হয়ে পড়ে। দ্বীপ হওয়ায় সেখানে কোনো সাইক্লোন সেল্টারও নেই। পানিতে ডুবে থই থই করে।
মুন্সীগঞ্জের সেন্ট্রাল কালিনগর গ্রামের জামিলা বেগম বলেন, একবার বাঁধ ভাঙলে আমাদের বেঁচে থাকার জন্য আর কোনো কিছু অবশিষ্ট থাকে না।
গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, উপকূলের বেশকিছু পয়েন্টে বেড়িবাঁধ খুবই ঝুঁকিতে রয়েছে। পানির চাপ বাড়লে টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে।
পশ্চিম দুর্গাবাটি গ্রামের মলিনা রানি রপ্তান বলেন, খোলপেটুয়া নদীর পাড়ে আমাদের বসবাস। আইলার পর থেকে প্রতিবছরই পশ্চিম দুর্গাবাটিতে খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। আমাদের সবকিছু নদীর মধ্যে। জমি জায়গা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। আবার ঝড় আসছে, কি হবে কে জানে।
ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রস্তুতি নিয়ে শ্যামনগরে কর্মরত পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডিও ইমরান হোসেন জানান, তাৎক্ষণিকভাবে কাজ করার জন্য তিন হাজার জিও বস্তা, দুই হাজার প্লাস্টিক বস্তা, ১০ জিও রোল প্রস্তুত আছে। এগুলো দিয়ে এক কিলোমিটার বাঁধ সংস্কার করা যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দিন জানান, জেলার ৬৮৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে বিভিন্ন পয়েন্টে ৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সাতক্ষীরায় ৮৮৭টি সাইক্লোন শেল্টার ও আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেখানে ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫০০মানুষ নিরাপদে আশ্রয় নিতে পারবেন। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিঝড় ডানা মোকাবিলার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।