শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৪৩ অপরাহ্ন
অনুসন্ধান ২৪ >> বরিশাল আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় অশনি উত্তর-পূর্ব দিকে ভারতের উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশের দক্ষিণে আঘাত হানতে পারে। নিম্নচাপে রূপ নেয়ার পর এটির গতিপথ কোন দিকে যাবে তা পরে জানা যাবে। যদিও ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতের কথা মাথায় রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার। আজ শনিবারই সেরে নেয়া হয়েছে জেলা পর্যায়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা।
বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় অশনি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে দক্ষিণের উপকূলবাসী। এরই মধ্যে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে একটি ঘূর্ণাবর্ত। ক্রমশ শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণাবর্তটি প্রবল সাইক্লোনে রূপান্তরিত হতে চলেছে। আজকালের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে প্রথমে লঘুচাপ, অতঃপর গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। গতিমুখ অনুযায়ী উপকূলের দিকে এগিয়ে আসলে আঘাত হানতে পারে বাংলাদেশের দক্ষিণের উপকূলে। ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়া হয়েছে অশনি; যার অর্থ ক্ষুব্ধ।
বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় সূত্র জানায়, অশনি মোকাবেলায় বরিশাল বিভাগে ৪ হাজার ৯১৫টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তত করা হয়েছে। যার মধ্যে বরিশাল জেলায় ১ হাজার ৭১টি আশ্রয় কেন্দ্র, পটুয়াখালীতে ৯২৫টি, ভোলায় ১১০৪টি, পিরোজপুরে ৭১২টি, বরগুনায় ৬২৯টি এবং ঝালকাঠিতে ৪৭৪টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ২০ লাখ মানুষের পাশাপাশি কয়েক লাখ গবাদি পশুও রাখা যাবে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোয় বিশুদ্ধ পানি, শুকনা খাবার ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, ত্রাণ-দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থাদের নিয়ে আজ শনিবার সকালে সভা করা হয়েছে। শুকনা খাবার ও সাইক্লোন সেন্টারগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সিপিপি ভলান্টিয়ারদেরও প্রস্তুত করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে আমরা কাজ করছি।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ মুহূর্তে ঘূর্ণাবর্তটি অবস্থান করছে দক্ষিণ আন্দামান সাগর এবং সন্নিহিত এলাকায়। ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টির প্রাথমিক প্রক্রিয়া নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে আজ। সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টির স্থলভাগে আঘাত করার সময় তিন দিন পিছিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির গতিমুখও পরিবর্তন হয়েছে। আগামী ১৩ মে দুপুরের পর থেকে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল দিয়ে স্থলভাগে আঘাতের আশঙ্কার কথা নির্দেশ করছে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির স্থলভাগে আঘাত করার সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ উঠতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়টি সাতক্ষীরা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোতে বড় ধরনের আঘাত হানতে পারে বলে জানা গেছে।
তিনি আরো বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বরিশাল জেলায় ৩১৬টি সাইক্লোন শেল্টার এবং আরো ৭৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত করা হয়েছে। জায়গুলোয় ৬ লাখ ৪২ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। রাখা যাবে প্রায় ৫০ হাজার গবাদিপশু।
বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসান বলেন, ঘূর্ণিঝড় অশনিমোকাবেলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় নিয়ে জেলায় জেলায় আলোচনা করা হয়েছে। এ মাসের জন্য আমরা আগেই প্রস্তুত ছিলাম। তাই বিভাগের ৬ জেলার ৪ হাজার আশ্রয় কেন্দ্র ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে।