শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:২৪ অপরাহ্ন
অনুসন্ধান২৪>>যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত মাসে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজা উপত্যকায় অন্তত ৬৭ ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।
জেনেভায় গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ইউনিসেফের মুখপাত্র রিকার্ডো পিরেস বলেন, সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় একটি মেয়েশিশু মারা গেছে।
এর আগের দিন গোটা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলের ব্যাপক হামলায় আরও সাত শিশু নিহত হয়।
পিরেস সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুই পক্ষের সম্মতিতে হওয়া একটি যুদ্ধবিরতির মধ্যেই এসব (হামলার) ঘটনা ঘটছে, যা অত্যন্ত ভয়াবহ। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পরও শিশুদের মৃত্যু বেড়ে চলেছে।’
ইউনিসেফের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি, এগুলো কোনো পরিসংখ্যান নয়: প্রতিটি শিশুরই একটি পরিবার ছিল, স্বপ্ন ছিল, জীবন ছিল—যা অব্যাহত সহিংসতায় মুহূর্তেই শেষ হয়ে গেছে।’
গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী শিশুরা। ইউনিসেফ গত মাসে জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৪ হাজার শিশু হতাহত হয়েছে।
সেভ দ্য চিলড্রেন চলতি সপ্তাহে জানায়, ২০২৪ সালে প্রতি মাসে গড়ে ৪৭৫টি ফিলিস্তিনি শিশু সারা জীবনের জন্য প্রতিবন্ধী হয়েছে। যুদ্ধের কারণে এদের কেউ মস্তিষ্কে আঘাত পেয়েছে, কারও শরীর ভয়ানকভাবে দগ্ধ হয়েছে।
সংস্থাটি বলেছে, আধুনিক ইতিহাসে অঙ্গহারা শিশুদের সবচেয়ে বড় আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে গাজা।
ইসরায়েল ক্ষুধাকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে ব্যাপক অভিযোগ আছে। এর ফলে গাজায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। খাবারের অভাবে এরই মধ্যে অনেক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
অন্যদিকে গত সপ্তাহে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করে, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে তাদের সেনাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে। জবাবে ইসরায়েল উপত্যকাজুড়ে ধারাবাহিক বিমান হামলা চালায়।তবে হামাস ইসরায়েলের এ দাবি নাকচ করে দিয়েছে। সংগঠনটি বলেছে, ইসরায়েলের হামলায় ওই সময়ে অন্তত ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ভয়াবহ উসকানিমূলক এ হামলা প্রমাণ করে, ইসরায়েল সরকার আবারও গাজায় জাতিহত্যা শুরু করতে চায়।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস বা এমএসএফ গতকাল জানিয়েছে, তাদের দল গাজায় সম্প্রতি অনেক ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুকে চিকিৎসা দিয়েছে। ইসরায়েলি হামলায় এসব নারী ও শিশুর কারও হাড় ভেঙে বেরিয়ে গেছে, আবার কারও হাত-পা বা মাথায় গুলির ক্ষত ছিল।
শীত শুরু হওয়ায় এখন গাজার গৃহহীন পরিবারগুলোর জন্য তাঁবু সবচেয়ে জরুরি। কিন্তু গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে ইসরায়েল এখনো বিধিনিষেধ জারি রাখায় এসব পরিবার ঠান্ডার মধ্যেই খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছে।